উঃ লোককথার কয়েককটি সাধারণ বৈশিষ্ট্য হল –
I.
শিশুদের জন্য রসদ। লোককথায় সাধারণত
শিশু ও কিশোর-কিশোরীদের জন্য রসদ থাকে।
II.
অজ্ঞাতপরিচয় লেখক। সাধারণভাবে এগুলির প্রকৃত রচয়িতাদের পরিচয় পাওয়া যায় না।
III.
অলিখিত কাহিনি। লোককথার কাহিনিগুলি
সাধারণভাবে অলিখিত হয়। বর্তমানে অবশ্য বিভিন্ন গবেষক এগুলি বই আকারে প্রকাশ করছেন।
IV.
মানুষের আলোচনা। এই কাহিনিগুলিতে
মানুষের দৈনন্দিন জীবনের সুখ-দুঃখের বিষয়গুলি বিশেষ গুরুত্ব পায়।
V.
ধর্মীয় বিষয় গুরুত্বহীন। তবে রুপকের মাধ্যমে
দেবদেবী বা অপদেবতার সংগে মানবচরিত্রকে যুক্ত করে লোককাহিনিগুলিকে আকর্ষনীয় করে
তোলা হয়।
VI.
মুখ্যচরিত্র মানুষ। লোকগাথার
মুখ্যচরিত্রগুলি সাধারনভাবে মানুষ হয়।
VII.
অতিপ্রাকৃতিক বিষয়। লোককথার চরিত্রগুলি
অধিকাংশ ক্ষেত্রে বাস্তব নয়। মানুষের সঙ্গে অতিপ্রাকৃতিক বিষয় যেমন – দেবদূত,
পরি, ডাইনি, পক্ষযুক্ত পশু ইত্যাদিকে
যুক্ত করে কাহিনিকে জনপ্রিয় করে তোলা হয়।
VIII.
ব্যক্তিত্ব আরোপ। এই সমস্ত
অতিপ্রাকৃতিক চরিত্রগুলির মধ্যে মানুষের মত ব্যক্তিত্ব আরোপিত হতে দেখা যায়। তারা মানুষের মত কথা
বলে এবং নিজেদের চিন্তার প্রকাশ ঘটায়।
IX.
নৈতিক শিক্ষার বার্তা। লোককথাগুলির
কেন্দ্রে থাকে নৈতিক শিক্ষার বার্তা। এতে অন্যায়ের বিরুদ্ধে ন্যায়, অসত্যের বিরুদ্ধে সত্য কিম্বা কাপুরুষতার পরিবর্তে পৌরুষত্ব তুলে ধরার
চেষ্টা করা হয়।
X.
প্রাকৃতিক আইন অকার্যকরী। লোকগাথাগুলি
শ্রোতাদের এমন এক জগতে নিয়ে যায় যেখানে প্রাকৃতিক আইন কার্যকরী হয়না।
XI.
অনির্দিষ্ট স্থান-কাল-পাত্র। এই সমস্ত
কাহিনিগুলিতে স্থান-কাল-পাত্রের কোন সুনির্দিষ্ট উল্লেখ পাওয়া যায় না। ‘একদা এক দেশে এক রাজা ছিলেন...’ এভাবে গল্পগুলি শুরু
হয়।
XII.
প্রচার ও প্রসারের মাধ্যম। নাবিক, সন্যাসী, চারণকবি, যুদ্ধে
পরাজিত বন্দি প্রমুখের মাধ্যমে এই লোকগাথাগুলি দেশ-দেশান্তরে ছড়িয়ে পড়ে।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন