উঃ লোককথার কাহিনিগুলি ইতিহাস-নির্ভর না হলেও ইতিহাস জানার জন্য এর বিশেষ গুরুত্ব আছে । যেমন – 1) সমাজ-সংস্কৃতির পরিচয় । অতীতকালের সামাজিক , সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় ঐতিহ্য সম্পর্কে মোটামুটি আভাস পাওয়া যায় । 2) কোন কোন কাহিনি থেকে তৎকালীন সময়ের অর্থনৈতিক কাঠামো সম্পর্কে ধারণা করা যায় । যেমন , চাঁদ সদাগরের কাহিনি থেকে মধ্যযুগের বনিকদের দূরদেশে বানিজ্য করার কথা জানা যায় । 3) বিনোদনের মাধ্যম । লোককাহিনিগুলি যুগ যুগ ধরে মানুষের আনন্দ-বিনোদনের কাজে লেগেছে । বর্তমান যুগেও এই কাহিনিগুলি সিনেমা , টিভি সিরিয়ালের মোড়কে একই কাজ করে চলেছে । যেমন , ‘ বেদের মেয়ে জোৎস্না ’, ‘ রূপবান কন্যা ’, ‘ সাত-ভাই-চম্পা ’ ইত্যাদি । 4) শিশু-শিক্ষায় অবদান । এই কাহিনিগুলি শিশুশিক্ষায় গুরুত্বপূর্ন প্রভাব ফেলে । নীতি-শিক্ষার ক্ষেত্রে শিশুমনের ওপর এই কাহিনিগুলি সহজে প্রভাব ফেলে । যেমন , ‘ আলীবাবা ও চল্লিশ চোর ’ চুরি করার বিরুদ্ধে নীতিশিক্ষা দেয় । 5) লোকশিক্ষার মাধ্যম । লোকশিক্ষার মাধ্যম হিসাবে লোকগাথা বিশিষ্ট ভূমিকা পালন করে । এপ্...
চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত কী? এর উদ্দেশ্য কী ছিল? চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের শর্তগুলি (বৈশিষ্ঠ্য) উল্লেখ কর। ভারতের আর্থ-সামাজিক ইতিহাসে এই ভূমি-ব্যবস্থার গুরুত্ব আলোচনা কর।
অথবা , চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের পটভূমি ব্যাখ্যা কর । এপ্রসঙ্গে ভারতের কৃষক সমাজের ওপর এই বন্দোবস্ত কীরূপ প্রভাব ফেলেছিল বর্ননা কর । উত্তর চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত । চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত হল এক ধরণের ভূমি-রাজস্ব ব্যবস্থা । ১৭৯৩ সালে লর্ড কর্ণওয়ালিস বাংলা , বিহার ও উড়িষ্যায় এই ভূমি-ব্যবস্থা চালু করেন । পরবর্তীকালে বারাণসী , উত্তর-পশ্চিম প্রদেশ ও মাদ্রাস প্রেসিডেন্সির কোনো কোনো অঞ্চলে এই ব্যবস্থা চালু করা হয় । চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের পটভূমি । কোম্পানির কর্মচারী ও ঐতিহাসিক আলেকজান্ডার ডাও ১৭৭২ সালে প্রথম চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের কথা বলেন । এরপর হেনরি পাত্তুলো , ড্যাক্রিস , টমাস ল প্রমুখ এই বন্দোবস্তের সপক্ষে যুক্তি দেখান । ১৭৮৬ সালে কর্ণওয়ালিশ গভর্নর জেনারেল হয়ে ভারতে আসেন । তিন বছর ধরে তিনি বাংলার ভূমি-রাজস্ব ব্যবস্থা সম্পর্কে ব্যপক অনুসন্ধান চালান । এরপর ১৭৯০ সালে দেশীয় জমিদারদের সঙ্গে দশ বছরের জন্য একটি বন্দোবস্ত করেন, যা ‘ দশসালা বন্দোবস্ত ’ নামে পরিচিত । সেই সঙ্গে জানিয়ে দেন , ইংল্যান্ডের কর্তপক্ষ অনুমোদন করলে এই...