সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

দক্ষিণ ভারতের ইঙ্গ-ফরাসি প্রতিদ্বন্দ্বিতার (বিরোধের) কারণ ও ফলাফল ব্যাখ্যা কর। এই দ্বন্দ্বে ফরাসিদের ব্যর্থতার কারণ ব্যাখ্যা কর।


অথবা,

ইঙ্গ-ফরাসি প্রতিদ্বন্দ্বিতা কী? এই প্রতিদ্বন্দ্বিতার পটভূমি আলোচনা কর এই দ্বন্দ্বে ইংরেজদের জয়লাভ করার কারণ কী ছিল? ইংরেজদের জয়লাভের ফলাফল / তাৎপর্য লেখ
অথবা,
কর্ণাটকের যুদ্ধ বলতে কী বোঝ? এই যুদ্ধের পটভূমি ও গুরুত্ব আলোচনা কর এই যুদ্ধে ইংরেজ ইস্টইন্ডিয়া কোম্পানির কেন জয়লাভ করেছিল?

উত্তর

ইঙ্গ-ফরাসি প্রতিদ্বন্দ্বিতা

ভারতে একচেটিয়া বাণিজ্যিক অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে দুই বিদেশি শক্তি ইংরেজ ও ফরাসিরা পরস্পরের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় লিপ্ত হয় দাক্ষিনাত্যে আধিপত্য প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে কর্নাটককে কেন্দ্র করে সংগঠিত এই দ্বন্দ্ব ইঙ্গ-ফরাসি প্রতিদ্বন্দ্বিতা (কর্নাটক যুদ্ধ) নামে পরিচিত ১৭৪০ থেকে ১৭৬৩ পর্যন্ত মোট তিনটি যুদ্ধ সংঘটিত হয় যথা, প্রথম (১৭৪৬-৪৮), দ্বিতীয় (১৭৪৯-৫৪), তৃতীয় (১৭৫৭-৬৩)

প্রতিদ্বন্দ্বিতার পটভূমি / কারণ

দাক্ষিণাত্যে ইংরেজ ও ফরাসিদের মধ্যে বিরোধের পটভূমি ব্যাখ্যা করলে প্রতিদ্বন্দ্বিতার কারণ জানা যাবে।
1.  মার্কেন্টাইল মতবাদ অষ্টাদশ শতকের এই মতবাদে বলা হয়, কোন জাতিকে সম্পদশালী হতে হলে তাকে বিশ্ববাণিজ্যে একচেটিয়া অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে এই ভাবনার দ্বারা প্রভাবিত হয়েই ইংরেজ ও ফরাসিরা পৃথিবীর অন্যান্য প্রান্তের মতো দক্ষিণ ভারতেও বাণিজ্যিক প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নামে
2.  মোঘল শক্তির দুর্বলতা ঔরঙ্গজেবের মৃত্যুর পর মোঘল শক্তির দ্রুত অবক্ষয় শুরু হয় অন্যদিকে মোঘলদের শক্তিশালী নৌবহর না থাকার সুযোগে ইংরেজ ও ফরাসি শক্তি নিজেদের বাণিজ্যিক আধিপত্য বাড়ানোর চেষ্টা শুরু করে
3.  অস্ট্রিয়ার উত্তরাধিকার যুদ্ধ এই যুদ্ধে ইংল্যান্ড অস্ট্রিয়াকে ও ফ্রান্স প্রাশিয়াকে সমর্থন করে ইউরোপের এই রাজনৈতিক সংঘর্ষের জেরে কর্নাটকের ইংরেজ ও ফরাসি গোষ্ঠি সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে
4.  দেশীয় রাজাদের দুর্বলতা ইউরোপীয় শক্তির তুলনায় ভারতের দেশীয় রাজারা দুর্বল ছিল অন্তর্কলহ এর অন্যতম কারণ ইংঙ্গ-ফরাসি শক্তি এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে দেশীয় রাজাদের পুতুল শাসকে পরিণত করে বানিজ্যে একচেটিয়া আধিপত্য প্রতিষ্ঠার নীতি গ্রহণ করে

এইভাবে ইঙ্গ-ফরাসি শক্তির ভারতীয় বাণিজ্যে একচেটিয়া আধিপত্যের লোভ এবং দেশীয় রাজাদের অন্তর্কলহ জনিত দুর্বলার প্রেক্ষাপটে দক্ষিণভারতে রাজনৈতিক সংকট দেখা দেয় এর অনিবার্য ফলশ্রুতি হিসাবে ইংরেজ ও ফরাসি কোম্পানী পরস্পরের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়ে

ফরাসিদের ব্যর্থতার ( পরাজয়ের ) কারণ

অথবা, ইংরেজদের জয়লাভের কারণ
প্রথম দিকে সাফল্য পেলেও কিছু নির্দিষ্ট কারণে ফরাসিরা এই যুদ্ধে পরাজিত হয় এবং ইংরেজরা সাফল্য পায় –
1)  বাংলায় আধিপত্য পলাশির যুদ্ধের পর ইংরেজ কোম্পানি বাংলার রাজনৈতিক ক্ষমতার নিয়ন্ত্রক হওয়ার কারণে প্রচুর সম্পদ ও একচেটিয়া বাণিজ্যের মালিক হয়ে যায় ফলে, তারা একপ্রকার অপরাজেয় হয়ে ওঠে বলা হয়, পলাশির যুদ্ধই প্রকৃতপক্ষে ভারতে ফরাসিদের ভাগ্য নির্ধারণ করে দেয়
2)   বাণিজ্যে গুরুত্বদান ইংরেজরা ভারতীয় রাজনীতিতে অংশ নিলেও বাণিজ্যকে কখনও উপেক্ষা করে নি কিন্তু ফরাসিরা উলটো পথে হাটায় আর্থিক সংকটে পড়ে
3)  নৌবহরের উপস্থিতি ইংরেজদের শক্তিশালী নৌবহর ছিল এবং এর দ্বারা তারা ভারতের উপকূল্ভাগ নিয়ন্ত্রন করত কিন্তু ফরাসিদের তা ছিল না ফলে, বিভিন্ন যুদ্ধে তারা পিছেয়ে পড়ে
4)   বাজার দখলের তাগিদ অষ্টাদশ শতকে ইংল্যান্ডে শিল্পবিল্পব হয় শিল্পের প্রয়োজনে ইংরেজরা কাঁচামাল সংগ্রহ ও শিল্পপন্য বিক্রির জন্য ভারতের বাজার দখলে প্রবল উৎসাহ দেখায় কিন্তু ফরাসি কোম্পানি এ বিষয়ে তেমন উৎসাহ দেখায় নি
5)  জনসমর্থন ব্রিটিশ কোম্পানি ছিল জনগণের প্রতিষ্ঠান তাই এর পিছনে ব্যপক জনসমর্থন ছিল, যা কোম্পানির আধিকারিক এবং কর্মচারিদের উৎসাহিত করত কিন্তু ফরাসি কোম্পানি রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন হওয়ায় এখানে জনসমর্থন সেভাবে ছিল না তাই প্রথম থেকেই ফরাসি কোম্পানি দুর্বল ছিল
6)   উপনিবেশ রক্ষায় আগ্রহ সপ্তবর্ষের যুদ্ধের সময় ইউরোপ ও আমেরিকায় ইঙ্গ-ফরাসি বিবাদ চললেও ভারতে উপনিবেশ রক্ষায় ইংরেজরা যথেষ্ট আগ্রহ দেখায় এক্ষেত্রে মাতৃভূমি থেকে কোম্পানি যথেষ্ট সাহায্য পায় কিন্তু ফরাসি কোম্পানি এক্ষেত্রে এধরণের আগ্রহ ও সাহায্য কোনোটাই তেমন পায়নি
7)   সেনাপতিদের যোগ্যতা ইঙ্গ-ফরাসি বিবাদের সময় সান্ডার্স, আয়ার কূট, ফোর্ড, লরেন্স প্রমূখ ইংরেজ সেনাপতি যুদ্ধে অসামান্য যোগ্যতা ও দক্ষতা দেখিয়ে ছিলেন কিন্তু ফরাসিদের সেনাপতিদের চারিত্রিক ত্রুটি ও তীব্র অন্তর্দন্দ্ব তাদের সাফল্যের অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায়
8)  কর্তৃপক্ষের ভুল সিদ্ধান্ত ফরাসি কর্তৃপক্ষের কয়েকটি মারাত্মক ভুল সিদ্ধান্ত যেমন - ডুপ্লের অপসারণ, তাঁর নীতির পরিবর্তে নতুন নীতি গ্রহণ, হায়দ্রাবাদ থেকে সেনাপতি বুসিকে অপসারণ ইত্যাদি পদক্ষেপগুলি ভারতে ইংরেজদের সুবিধা করে দিয়েছিল।

যুদ্ধের ফলাফল বা প্রভাব

১৭৬৩ সালে প্যারিসের সন্ধি দ্বারা ভারতে ইঙ্গ-ফরাসি প্রতিদ্বন্দ্বিতার (কর্নাটক যুদ্ধের) অবসান ঘটে ভারতের ইতিহাসে এই দ্বন্দ্বের গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব পড়েছিল –
1)  দেশীয় রাজাদের অবস্থা এই দ্বন্দ্বের ফলে দেশীয় রাজা মহম্মদ আলী ও সলাবৎ জঙ্গ ইংরেজদের হাতের পুতুলে পরিণত হয়
2)  দেশীয় শাসকদের সামরিক দুর্বলতা যুদ্ধে জয়লাভের ফলে ইংরেজরা বুঝতে পারে যে, দেশীয় শাসকদের দুর্বলতা ও পারস্পরিক বিরোধ ভারতে ব্রিটিশ আধিপত্যের প্রসার ঘটাতে খুবই সাহাকয্য করবে
3)  নতুন সমরকৌশল ইংরেজরা আরও বুঝতে পারে, ভারতীয় সৈন্যদের ইউরোপীয় পদ্ধতিতে শিক্ষা দিলে তারা ইউরোপীয় সৈন্যের সমকক্ষ হতে পারে তাই তারা এই সময় থেকে নতুন সমরকৌশল বা নীতি গ্রহণ করে
4)  ইংরেজ সাম্রাজ্যবাদের প্রসার কর্নাটকের যুদ্ধে জয়লাভের ফলে ভারতে পাশ্চাত্য সাম্রাজ্যবাদের ভিত্তি আরও দৃঢ় হয় বলে ইতিহাসবিদরা মনে করেন
5)  ফরাসিদের স্বপ্নভঙ্গ কর্নাটকের যুদ্ধে পরাজয়ের ফলে ভারতে ফরাসি সাম্রাজ্য স্থাপনের আশা সম্পূর্ণ ধুলিসাৎ হয়ে যায়
6)  বাণিজ্যে একচেটিয়া অধিকার যুদ্ধ জয়ের ফলে ইংরেজ শক্তি ভারতের বহির্বাণিজ্য ও অন্তর্বাণিজ্যে তাদের একচেটিয়া অধিকার কায়েম করে

উপসংহার

সর্বোপরি, ইঙ্গ-ফরাসি প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ইংরেজদের জয়লাভ গভীর তাৎপর্যপূর্ণ এপ্রসঙ্গে ঐতিহাসিক ফিলিপ বলেছেন – এই যুদ্ধের ফলে ভারতে বিদেশি আধিপত্যের পথ উন্মুক্ত হয়

মন্তব্যসমূহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

OUR OTHER BOOKS (ICSE & CBSE)
OUR BOOKS fOR WBBSE & WBCHSE


বাংলা বই ★ দ্বাদশ শ্রেণি
উচ্চমাধ্যমিক বাংলা পরীক্ষার 👆আদর্শ প্রশ্নোত্তরের একমাত্র পোর্টাল

জনপ্রিয় প্রশ্ন-উত্তরগুলি দেখুন

চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত কী? এর উদ্দেশ্য কী ছিল? চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের শর্তগুলি (বৈশিষ্ঠ্য) উল্লেখ কর। ভারতের আর্থ-সামাজিক ইতিহাসে এই ভূমি-ব্যবস্থার গুরুত্ব আলোচনা কর।

অথবা , চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের পটভূমি ব্যাখ্যা কর । এপ্রসঙ্গে ভারতের কৃষক সমাজের ওপর এই বন্দোবস্ত কীরূপ প্রভাব ফেলেছিল বর্ননা কর । উত্তর চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত । চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত হল এক ধরণের ভূমি-রাজস্ব ব্যবস্থা ।   ১৭৯৩ সালে  লর্ড কর্ণওয়ালিস বাংলা , বিহার ও উড়িষ্যায় এই ভূমি-ব্যবস্থা চালু করেন । পরবর্তীকালে বারাণসী , উত্তর-পশ্চিম প্রদেশ ও মাদ্রাস প্রেসিডেন্সির কোনো কোনো অঞ্চলে  এই ব্যবস্থা  চালু করা হয় । চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের পটভূমি । কোম্পানির কর্মচারী ও ঐতিহাসিক আলেকজান্ডার ডাও ১৭৭২ সালে  প্রথম  চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের কথা বলেন । এরপর হেনরি পাত্তুলো , ড্যাক্রিস , টমাস ল প্রমুখ এই বন্দোবস্তের সপক্ষে যুক্তি দেখান । ১৭৮৬ সালে কর্ণওয়ালিশ গভর্নর জেনারেল হয়ে ভারতে আসেন ।  তিন বছর ধরে  তিনি  বাংলার ভূমি-রাজস্ব ব্যবস্থা সম্পর্কে ব্যপক অনুসন্ধান চালান ।  এরপর ১৭৯০ সালে দেশীয় জমিদারদের সঙ্গে দশ বছরের জন্য একটি বন্দোবস্ত করেন, যা ‘ দশসালা বন্দোবস্ত ’ নামে পরিচিত । সেই সঙ্গে জানিয়ে দেন , ইংল্যান্ডের কর্তপক্ষ অনুমোদন করলে এই...

জাদুঘর কাকে বলে? অতীত পুনর্গঠনে জাদুঘরের ভূমিকা আলোচনা কর।

অথবা , জাদুঘর কী ? জাদুঘরের উদ্দেশ্য ও কার্যাবলি বর্ননা কর । অথবা , জাদুঘর বলতে কী বোঝ ? আধুনিক ইতিহাস রচনায় জাদুঘরের গুরুত্ব লেখ । উঃ জাদুঘরের সংজ্ঞা বাংলা ‘ জাদুঘর ’ শব্দটির ইংরাজি প্রতিশব্দ হল মিউজিয়াম ( Museum) । ‘ মিউজিয়াম ’ শব্দটির মূল উৎস হল প্রাচীন গ্রীক শব্দ Mouseion ( মউসিয়ান) , যার অর্থ হল গ্রীক পুরাণের শিল্পকলার পৃষ্ঠপোষক মিউসদের মন্দির । এই ধরণের মন্দিরগুলিকে কেন্দ্র করে প্রাচীন গ্রিসে পাঠাগার , প্রাচীন শিল্পকলা প্রভৃতির সংগ্রহশালা গড়ে উঠত । ইন্টারন্যাশনাল কাউন্সিল অফ মিউজিয়াম -এর মতে, জাদুঘর হল একটি অলাভজনক, জনসাধারণের কাছে উন্মুক্ত এবং স্থায়ী সমাজসেবামূলক প্রতিষ্ঠান যা শিক্ষালাভ, জ্ঞানচর্চা ও আনন্দলাভের উদ্দেশ্যে মানব ঐতিহ্যের স্পর্শযোগ্য ও স্পর্শ-অযোগ্য জিনিসপত্র সংগ্রহ করে, সংরক্ষণ করে, প্রদর্শন করে এবং সেগুলি নিয়ে গবেষণা করে। উদাহরণ – ব্রিটিশ মিউজিয়াম। এখানে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের শিল্পকলা, প্রত্নতত্ত্ব, ইতিহাস, বিজ্ঞান প্রভৃতি বিভিন্ন বিষয়ের নিদর্শন। এখানে পৃথক পৃথক ঘরে পৃথক পৃথক বিষয়ের নিদর্শন প্রদর্শনের ব্যবস্থা রয়েছে। জাদুঘরের উদ্দেশ্য , ক...

ঠান্ডা লড়াই কী? ঠান্ডা লড়াইয়ের পটভূমি আলোচনা করো।

ঠান্ডা লড়াই কী : দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অবসানের (১৯৪৫) পর পৃথিবীর অধিকাংশ দেশ পরস্পর দুটি রাষ্ট্রজোটের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যায়। একটি আমেরিকার নেতৃত্বে পশ্চিমি ধনতান্ত্রিক রাষ্ট্রজোট অন্যটি সোভিয়েত রাশিয়ার নেতৃত্বে সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রজোট। এই দুই রাষ্ট্রজোট কোন প্রত্যক্ষ যুদ্ধ না করেও দীর্ঘকাল ধরে পারস্পরিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা ও যুদ্ধের আবহ বা ছায়াযুদ্ধ চালাতে থাকে। এই ছায়াযুদ্ধই ইতিহাসে 'ঠান্ডা লড়াই' নাম পরিচিত। মার্কিন সাংবাদিক ওয়াল্টার লিপম্যান ( Walter Lippmaan ) ১৯৪৭ সালে তাঁর The Cold War গ্রন্থে সর্বপ্রথম এই শব্দটি ব্যবহার করেন। ঠান্ডা লড়াইয়ের বৈশিষ্ঠ্য : 'ঠান্ডা লড়াই কী' এই অংশের জন্য ৩/৪ (তিন বা চার ) নম্বর (মার্কস) থাকলে অথবা বৈশিষ্ঠ্য লিখতে বললে  এখানে ক্লিক কর এবং যে অংশ বের হবে তা এই পয়েন্টের নিচে জুড়ে দাও। ঠান্ডা লড়াইয়ের পটভূমি : ঠান্ডা লড়াই-এর পিছনে শুধুমাত্র আদর্শগত বা অর্থনৈতিক কারণ বা ভিত্তি কাজ করেছিল এমন নয়। এর পিছনে আরও কিছু বিষয় তথা আন্তর্জাতিক ঘটনাবলী কার্যকর ছিল। সমগ্র কারণকে এভাবে ব্যাখ্যা করা যেতে পারে। সাম্যবাদের বিরোধিতা : রাশিয়...

পলাশির যুদ্ধের কারণ ও ফলাফল বর্ননা কর।

পলাশির যুদ্ধের কারণ ও ফলাফল পলাশির যুদ্ধ ১৭৫৬ সালে নবাব আলীবর্দি মারা যান । এরপর তাঁর পৌত্র সিরাজ-উদ-দৌলা বাংলার সিংহাসন আরোহন করেন । সিংহাসন আরোহনের কিছুদিনের মধ্যেই ইংরেজদের সাথে তাঁর বিরোধ বাঁধে , যার চূড়ান্ত পরিনতি হল ১৭৫৭ সালের পলাশির যুদ্ধ ।   এই যুদ্ধের পটভূমি বিশ্লেষণ করলেই সিরাজের সঙ্গে ইংরেজদের বিরোধের কারণগুলি পরিষ্কার হয়ে ওঠে । সেই সঙ্গে এটাও বোঝা যাবে এই বিরোধে সিরাজেরে ‘ অহমিকাবোধ ’ ও ‘ অর্থলোভ ’ দায়ী ছিল কিনা । পলাশির যুদ্ধের পটভূমি / কারণ সিরাজের সঙ্গে ইংরেজদের বিরোধের কারণগুলি হল –   আনুগত্যদানে বিলম্ব। সিরাজ বাংলার সিংহাসনে বসলে প্রথা অনুযায়ী নবাবের প্রতি আনুগত্য জানিয়ে ফরাসি, ওলন্দাজ প্রভৃতি কোম্পানিগুলি উপঢৌকন পাঠালেও ইংরেজরা ইচ্ছা করে উপঢৌকন পাঠাতে দেরি করে। এতে সিরাজ অপমানিত হন।   ষড়যন্ত্রের সংবাদ। সিংহাসনে বসার সময় থেকে ঘষেটি বেগম, সৌকত জঙ্গ ও কয়েকজন রাজকর্মচারি সিরাজের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র লিপ্ত ছিলেন। খবর আসে যে, এই ষড়যন্ত্রে ইংরেজরা যুক্ত আছে এবং তাঁকে সরিয়ে অনুগত কাউকে সিংহাসনে বসানোর চক্রান্ত করছে।   কৃষ্ণদাসকে আশ্রয়দান। ঘষেটি ব...

বাংলার সংস্কার আন্দোলনে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের ভূমিকা আলোচনা কর।

অথবা, বাংলার সমাজ ও শিক্ষা সংস্কার আন্দোলনে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের ভূমিকা আলোচনা কর। অথবা, ঊনবিংশ শতকে নারীশিক্ষা ও নারীমুক্তি আন্দোলনে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের অবদান উল্লেখ কর। অথবা, উনিশ শতকের নবজাগরণে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের ভূমিকা কি ছিল? এ প্রসঙ্গে নারীজাতির উন্নয়নে তাঁর অবদান ব্যাখ্যা কর।  বিদ্যাসাগর ও সংস্কার আন্দোলন : ঊনবিংশ শতকে ভারতে যে কজন সংস্কারকের জন্ম হয়েছিল তাঁদের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ ছিলেন ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর। তিনি ছিলেন বঙ্গীয় নবজাগরণের মূর্ত প্রতীক। তাঁর মধ্যে ইউরোপীয় নবজাগরণের প্রবল যুক্তিবাদ, ধর্মনিরপেক্ষতা, প্রগাঢ় মানবতাবাদ, এবং প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য ভাবাদর্শের এক অপূর্ব সমন্বয় ঘটেছিল। মাইকেল মধুসূদনের মতে, ' যাঁর মনীষা প্রাচীন ঋষিদের মতো, কর্মদক্ষতা ইংরেজদের মত এবং হৃদয়বত্তা বাঙালি জননীর মত। ' বিদ্যাসাগরের সংস্কার প্রচেষ্টা : বিদ্যাসাগরের সংস্কার প্রচেষ্টাকে মূলত দুই ভাগে ভাগ করে আলোচনা করা যায়। এক . শিক্ষা সংস্কার, দুই . সমাজ সংস্কার। তবে তাঁর এই দুই প্রচেষ্টার কেন্দ্রবিন্দুতে বেশিরভাগ জায়গা জুড়ে ছিল নারীশিক্ষা ও ...

চিনের ৪ ঠা মে আন্দোলনের কারণ বিশ্লেষণ কর। এই আন্দোলনের প্রভাব আলোচনা কর। (২০১৬)

অথবা, বিংশ শতকে চিনে ৪ ঠা মে-র আন্দোলনের উত্থান ও গুরুত্ব বিশ্লেষণ কর। চিনের সেই সময়কার দুটি উল্লেখযোগ্য সংবাদপত্রের নাম লেখো। অথবা, চিনের ৪ ঠা মের আন্দোলনের পটভূমি আলোচনা কর। এই আন্দোলনের ফলাফল বা তাৎপর্য ব্যাখ্যা কর।  ৪ ঠা মে-র আন্দোলন : ১৯১৪  সালে প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শুরু হলে জাপান চিনে আগ্রাসন চালায়। যুদ্ধে চীন মিত্রপক্ষে যোগ দিলেও যুদ্ধের পর তারা কোনো সুবিচার পায় নি। এরই পরিপ্রেক্ষিতে বিদেশি আধিপত্যের বিরুদ্ধে চিনা জাতীয়তাবাদী জনগণ চেন-তু-শিউ এর নেতৃত্বে  ১৯১৯ সালে ৪ ঠা মে পিকিং-এর তিয়েন-আন-মেন স্কোয়ার -এ  এক আন্দোলনের ডাক দেয়। এই আন্দোলন চিনের ইতিহাসে ৪ ঠা মে-র আন্দোলন নামে পরিচিত। আন্দোলনের কারণ ( পটভূমি ) : এই আন্দোলনের প্রেক্ষাপট আলোচনা করলে এর কারণগুলি অনুধাবন করা যায়। ইউয়ান-সি-কাই এর নৃশংসতা : ১৯১১ সালে বিপ্লবের পর রাষ্ট্রপতি সান-ইয়াত-সেন দেশের গৃহযুদ্ধ এড়াতে ইউয়ান-সি-কাই  - এর অনুকূলে স্বেচ্ছায় রাষ্ট্রপতি পদ ত্যাগ করেন। কিন্তু ক্ষমতায় আসার পর  ইউয়ান-সি-কাই  সমস্ত সাংবিধানিক পদ্ধতি বাতিল করে সামরিক একনায়কতন...

তিন আইন কী?

তিন আইন কী? ব্রাহ্মসমাজের আন্দোলনের ফলে ১৮৭২ সালে ব্রিটিশ সরকার বাল্যবিবাহ, বহুবিবাহ প্রভৃতি সামাজিক কুসংস্কারগুলি নিষিদ্ধ করে এবং বিধবাবিবাহ ও অসবর্ণ বিবাহকে স্বীকৃতি দেয়। যে আইনের মাধ্যমে ব্রিটিশ সরকার এই ঘোষণা জারি করে তাকে ' তিন আইন ' বলে।

'মুক্তদ্বার নীতি' (Open Door Policy) কী?

চিনে ইউরোপীয় দেশগুলির উপনিবেশিক আধিপত্য স্থাপনের ফলে আমেরিকা শঙ্কিত হয়ে পড়ে। তারা ভাবতে শুরু করে এর ফলে চিনে আমেরিকার বাণিজ্যিক স্বার্থ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এই পরিস্থি...

মিরাট ষড়যন্ত্র মামলা (১৯২৯) কী? এই প্রেক্ষাপট কী ছিল? এই মামলার পরিণতি কী হয়েছিল?

কোন পরিস্থিতিতে মিরাট ষড়যন্ত্র মামলা (১৯২৯) শুরু হয়? এই মামলায় অভিযুক্ত কয়েকজন শ্রমিক নেতার নাম লেখো। এই মামলার ফলাফল কী হয়েছিল? অথবা, মিরাট ষড়যন্ত্র মামলা (১৯২৯) কী? এই প্রেক্ষাপট কী ছিল? এই মামলার পরিণতি কী হয়েছিল? অথবা, ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে কমিউনিস্ট পার্টির অবদানের একটি উদাহরণ দাও। এপ্রসঙ্গে মিরাট ষড়যন্ত্র মামলার প্রেক্ষাপট আলোচনা কর। এই মামলার গুরুত্ব ব্যাখ্যা কর। উত্তর : মিরাট ষড়যন্ত্র মামলা : ভারতে শ্রমিক আন্দোলনের ক্ষেত্রে কমিউনিস্টদের প্রভাব বৃদ্ধি পেলে ব্রিটিশ সরকার ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়ে। এইরূপ পরিস্থিতিতে ব্রিটিশ সরকার কমিউনিস্টদের বিরুদ্ধে কঠোর দমননীতি গ্রহণ করেছিল। মিরাট ষড়যন্ত্র মামলা (১৯২৯) হল এরকমই এক দমননীতির প্রকৃষ্ট উদাহরণ। মামলার প্রেক্ষাপট : ১) শ্রমিক-মালিক বিরোধ । ঊনবিংশ শতকের শেষদিকে ভারতে শিল্পায়ন শুরু হলে শ্রমিক শ্রেণির উদ্ভব হয়। বিংশ শতকের প্রথম দিকে মালিক শ্রেণির শোষণ ও অত্যাচারে শ্রমিক-মালিক সংঘর্ষ অনিবার্য হয়ে ওঠে। শ্রমিক শ্রেণির অসন্তোষকে কাজে লাগিয়ে কমিউনিস্টরা ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন জোরদার করে তুলে ব্রিটিশ সরকার চিন্তায় পড়ে যা...

ভাইকম সত্যাগ্রহ কী

ভাইমক বর্ণহিন্দুদের একটি মন্দির । দক্ষিণ ভারতের ত্রিবাঙ্কুরে এটি অবস্থিত। এই মন্দিরের সামনের রাস্তা দিয়ে নিম্নবর্ণের মানুষদের চলাচল নিষিদ্ধ ছিল। শ্রীনারায়ণ গুরু ...