সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

জোট নিরপেক্ষ নীতির প্রেক্ষাপট ব্যাখ্যা করো। এর মূল নীতিগুলি উল্লেখ করো। এই নীতি প্রয়োগের ক্ষেত্রে ভারতের ভূমিকার মূল্যায়ন করো।

জোটনিরপেক্ষ নীতির পটভূমি ব্যাখ্যা করো। এর মূল নীতিগুলি উল্লেখ করো। এই নীতি প্রয়োগের ক্ষেত্রে ভারতের ভূমিকার মূল্যায়ন করো।

জোটনিরপেক্ষ নীতির পটভূমি ব্যাখ্যা করো। জোট নিরপেক্ষ আন্দোলনের মূল নীতিগুলি উল্লেখ করো। এই নীতি প্রয়োগের ক্ষেত্রে ভারতের ভূমিকার মূল্যায়ন করো।
জোটনিরপেক্ষ নীতির পটভূমি মূলনীতি ও প্রয়োগে ভারতের ভূমিকা

জোটনিরপেক্ষ নীতির পটভূমি:

১) বিশ্ব দুটি সামরিক জোটে বিভক্ত হওয়া :

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হলে প্রায় সমগ্র বিশ্ব পরস্পর বিরোধী দুটি রাষ্ট্রজোটে বিভক্ত হয়ে পড়ে। একটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে পুঁজিবাদী জোট এবং অন্যটি সোভিয়েত ইউনিয়নের নেতৃত্বে সাম্যবাদী জোট। 

২) সদ্য স্বাধীন দেশগুলোর জাতীয় স্বার্থ ও নিরাপত্তা :

কিন্তু এশিয়া, আফ্রিকা ও ল্যাটিন আমেরিকার কয়েকটি দেশ এই দুই জোট থেকে নিজেদের সরিয়ে রেখে নিজ নিজ জাতীয় স্বার্থ রক্ষা ও নতুন পাওয়া স্বাধীনতাকে সুরক্ষিত রাখার জন্য চেষ্টা করে। ওই দুই রাষ্ট্রজোটে যুক্ত না হয়ে নিরপেক্ষতার নীতি গ্রহণ করে। এই নীতিকে ‘জোটনিরপেক্ষ নীতি’ বলে।

এই জোটনিরপেক্ষ নীতি গ্রহণের প্রেক্ষাপটে ১৯৫৫ সালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী জহরলাল নেহেরুর নেতৃত্বে যে আন্দোলনের সূচনা হয় তা ‘জোটনিরপেক্ষ (নির্জোট) আন্দোলন’ নামে পরিচিতি।

জোটনিরপেক্ষ আন্দোলনের মূলনীতি, উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য :

ক) জোটনিরপেক্ষ আন্দোলনের মূলনীতি :

১৯৫৪ সালের ২৯ এপ্রিল ভারতের প্রধানমন্ত্রী জহরলাল নেহেরু ও চিনা প্রধানমন্ত্রী চৌ এন লাই বৈদেশিক সম্পর্ক নির্ধারণের ক্ষেত্রে পাঁচটি নীতি গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেন। এই নীতিগুলি ‘পঞ্চশীল নীতি’ নামে পরিচিত।
১) পরস্পরের রাষ্ট্রীয় অখন্ডতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতি শ্রদ্ধা দেখানো,
২) একে অপরকে আক্রমণ না করা,
৩) পরস্পরের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করা,
৪) সমমর্যাদার ভিত্তিতে পারস্পরিক সাহায্য দান করা,
৫) শান্তিপূর্ণভাবে পাশাপাশি অবস্থান করা।

১৯৫৫ সালে বান্দুং সম্মেলনে এই পাঁচটি মূলনীতির সঙ্গে আরো পাঁচটি নীতি যুক্ত হয়ে ‘দশশীল নীতি’ গ্রহণ করা হয়। এই দশটি নীতি হলো জোটনিরপেক্ষ আন্দোলনের মূলনীতি

খ) জোটনিরপেক্ষ আন্দোলনের উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য :

জোটনিরপেক্ষ আন্দোলনের মূলনীতি কার্যকর করাই ছিল এই আন্দোলনের প্রধান উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য।
১) বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য শান্তিপূর্ণ পররাষ্ট্র নীতি গ্রহণ করা,
২) উপনিবেশ ও বর্ণবৈষম্যের বিরোধিতা করা,
৩) প্রত্যেকটি সদস্য রাষ্ট্রের অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সামাজিক পশ্চাৎপদতার অবসান ঘটানো,
৪) আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে সামরিক শক্তি ও জঙ্গিবাদীতার পরিবর্তে পারস্পরিক আলাপ আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করা,
৫) কোন রাষ্ট্রের প্রতি ভীতি প্রদর্শন, বল প্রয়োগ বা আক্রমণ না করা,
৬) পারস্পরিক প্রতিযোগিতার পরিবর্তে সহযোগিতা ও সার্থরক্ষার ব্যবস্থা করা,
৭) মানবতা, মূল্যবোধ ও ন্যায়নীতির প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করে আন্তর্জাতিকতাবোধ ও বিশ্ব ভ্রাতৃত্ববোধ বৃদ্ধি করা,
৮) সকল দেশের সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতাকে স্বীকৃতি দেওয়া,
৯) ছোট বা বড় — সমস্ত জাতির সমান অধিকারের স্বীকৃতি জানানো।
১০) মৌলিক অধিকার ও সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের সনদের উদ্দেশ্য ও লক্ষ্যের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা।

জোটনিরপেক্ষ আন্দোলনে ভারতের ভূমিকা :

জোটনিরপেক্ষ আন্দোলনে ভারত ও তার তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জহরলাল নেহরু সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন এবং বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সমস্যা সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।

ক) দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া :

১) কোরিয়া সংকট সমাধান : ১৯৫০ সালে উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে যুদ্ধ ও যুদ্ধ পরবর্তী বন্দী বিনিময় সংক্রান্ত সমস্যা সমাধানে ভারত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়।
২) ভিয়েতনাম সমস্যার সমাধান : ১৯৫৪ সালে জেনেভা সম্মেলনে ফরাসী সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে এবং ভিয়েতনামি জনগণের পক্ষে ভারতের অবস্থান ভিয়েতনাম সমস্যার সমাধানে গৌরবময় ভূমিকা রেখেছিল।
৩) রাষ্ট্রসঙ্ঘের চীনের সদস্যপদ : সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে দীর্ঘ লড়াইয়ের পর ১৯৪৯ সালে চিনে সাম্যবাদী সরকার প্রতিষ্ঠিত হলে মার্কিনজোট তাকে স্বীকৃতি দেয়নি। জোট নিরপেক্ষ আন্দোলনের নেতা হিসেবে ভারতের জোরালো সমর্থনে চিন রাষ্ট্রসঙ্ঘের সদস্য পদ লাভ করে।

খ) পশ্চিম এশিয়া ও আফ্রিকা :

১) মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন সামরিক জোট : ১৯৫০ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মধ্যপ্রাচ্যে সামরিক জোট স্থাপনের উদ্দেশ্যে সিয়াটো ও বাগদাদ চুক্তি স্বাক্ষর করলে ভারত তা অগ্রাহ্য করে।
২) পশ্চিম এশিয়ার মুক্তি সংগ্রাম : পশ্চিম এশিয়ায় সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী জাতীয় মুক্তি আন্দোলনকে নির্জোট আন্দোলনের নেতা হিসেবে ভারত জোরালো সমর্থন করে।
৩) সুয়েজ সংকট সমাধান : ১৯৫৬ সালে মিশরের উপর ইংরেজ, ফরাসি ও ইসরাইল আক্রমণ করলে সুয়েজ সংকট সৃষ্টি হয়। নির্জোট আন্দোলনের নেতা হিসেবে ভারত এই আক্রমণের তীব্র প্রতিবাদ জানায়। অবশেষে জাতিপুঞ্জের হস্তক্ষেপে।
৪) কঙ্গো ও আলজেরিয়ার সংকট : এছাড়া কঙ্গোকে ঐক্যবদ্ধ রাখা ও আলজেরিয়ার স্বাধীনতা আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়ে আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

গ) তৃতীয় বিশ্বে নেতৃত্ব দান :

এইভাবে একের পর এক জটিল আন্তর্জাতিক সমস্যার সমাধানকল্পে ভারতের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা তাকে তৃতীয় বিশ্বের নেতৃত্বের পদে তুলে আনে। এই পদে থেকেই ভারত ১৯৫৬ সালে হাঙ্গেরীতে সোভিয়েত আক্রমণের বিরোধিতা করে।

ভারতের ভূমিকার মূল্যায়ন :

সুতরাং জোটনিরপেক্ষ আন্দোলনের নেতা হিসেবে ভারত বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সমস্যা সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। বিশ্ব রাজনৈতিক মঞ্চে ভারতের মর্যাদা বৃদ্ধি পেয়েছে।

তবে, ভারত ও তার প্রতিবেশী রাষ্ট্র চীন ও পাকিস্তানকে কেন্দ্র করে উদ্ভূত সমস্যার স্থায়ী সমাধান করতে পারেনি। সেদিক থেকে বিচার করলে এই ঘটনা জোটনিরপেক্ষ আন্দোলনের একটা ব্যর্থতার উদাহরণ হিসেবে চিহ্নিত হবে।
----------xx--------



বিকল্প প্রশ্ন :


আরও প্রশ্ন দেখো :
  1. জোটনিরপেক্ষ নীতির প্রবর্তক কে ছিলেন?
  2. জোটনিরপেক্ষ নীতি কী?
  3. জোটনিরপেক্ষ আন্দোলনের কয়েকজন নেতার নাম লেখো। 
  4. মার্শাল টিটো কে ছিলেন?
  5. বান্দুং সম্মেলন গুরুত্বপূর্ণ কেন?

মন্তব্যসমূহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

OUR OTHER BOOKS (ICSE & CBSE)
OUR BOOKS fOR WBBSE & WBCHSE


বাংলা বই ★ দ্বাদশ শ্রেণি
উচ্চমাধ্যমিক বাংলা পরীক্ষার 👆আদর্শ প্রশ্নোত্তরের একমাত্র পোর্টাল

জনপ্রিয় প্রশ্ন-উত্তরগুলি দেখুন

চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত কী? এর উদ্দেশ্য কী ছিল? চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের শর্তগুলি (বৈশিষ্ঠ্য) উল্লেখ কর। ভারতের আর্থ-সামাজিক ইতিহাসে এই ভূমি-ব্যবস্থার গুরুত্ব আলোচনা কর।

অথবা , চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের পটভূমি ব্যাখ্যা কর । এপ্রসঙ্গে ভারতের কৃষক সমাজের ওপর এই বন্দোবস্ত কীরূপ প্রভাব ফেলেছিল বর্ননা কর । উত্তর চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত । চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত হল এক ধরণের ভূমি-রাজস্ব ব্যবস্থা ।   ১৭৯৩ সালে  লর্ড কর্ণওয়ালিস বাংলা , বিহার ও উড়িষ্যায় এই ভূমি-ব্যবস্থা চালু করেন । পরবর্তীকালে বারাণসী , উত্তর-পশ্চিম প্রদেশ ও মাদ্রাস প্রেসিডেন্সির কোনো কোনো অঞ্চলে  এই ব্যবস্থা  চালু করা হয় । চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের পটভূমি । কোম্পানির কর্মচারী ও ঐতিহাসিক আলেকজান্ডার ডাও ১৭৭২ সালে  প্রথম  চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের কথা বলেন । এরপর হেনরি পাত্তুলো , ড্যাক্রিস , টমাস ল প্রমুখ এই বন্দোবস্তের সপক্ষে যুক্তি দেখান । ১৭৮৬ সালে কর্ণওয়ালিশ গভর্নর জেনারেল হয়ে ভারতে আসেন ।  তিন বছর ধরে  তিনি  বাংলার ভূমি-রাজস্ব ব্যবস্থা সম্পর্কে ব্যপক অনুসন্ধান চালান ।  এরপর ১৭৯০ সালে দেশীয় জমিদারদের সঙ্গে দশ বছরের জন্য একটি বন্দোবস্ত করেন, যা ‘ দশসালা বন্দোবস্ত ’ নামে পরিচিত । সেই সঙ্গে জানিয়ে দেন , ইংল্যান্ডের কর্তপক্ষ অনুমোদন করলে এই...

জাদুঘর কাকে বলে? অতীত পুনর্গঠনে জাদুঘরের ভূমিকা আলোচনা কর।

অথবা , জাদুঘর কী ? জাদুঘরের উদ্দেশ্য ও কার্যাবলি বর্ননা কর । অথবা , জাদুঘর বলতে কী বোঝ ? আধুনিক ইতিহাস রচনায় জাদুঘরের গুরুত্ব লেখ । উঃ জাদুঘরের সংজ্ঞা বাংলা ‘ জাদুঘর ’ শব্দটির ইংরাজি প্রতিশব্দ হল মিউজিয়াম ( Museum) । ‘ মিউজিয়াম ’ শব্দটির মূল উৎস হল প্রাচীন গ্রীক শব্দ Mouseion ( মউসিয়ান) , যার অর্থ হল গ্রীক পুরাণের শিল্পকলার পৃষ্ঠপোষক মিউসদের মন্দির । এই ধরণের মন্দিরগুলিকে কেন্দ্র করে প্রাচীন গ্রিসে পাঠাগার , প্রাচীন শিল্পকলা প্রভৃতির সংগ্রহশালা গড়ে উঠত । ইন্টারন্যাশনাল কাউন্সিল অফ মিউজিয়াম -এর মতে, জাদুঘর হল একটি অলাভজনক, জনসাধারণের কাছে উন্মুক্ত এবং স্থায়ী সমাজসেবামূলক প্রতিষ্ঠান যা শিক্ষালাভ, জ্ঞানচর্চা ও আনন্দলাভের উদ্দেশ্যে মানব ঐতিহ্যের স্পর্শযোগ্য ও স্পর্শ-অযোগ্য জিনিসপত্র সংগ্রহ করে, সংরক্ষণ করে, প্রদর্শন করে এবং সেগুলি নিয়ে গবেষণা করে। উদাহরণ – ব্রিটিশ মিউজিয়াম। এখানে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের শিল্পকলা, প্রত্নতত্ত্ব, ইতিহাস, বিজ্ঞান প্রভৃতি বিভিন্ন বিষয়ের নিদর্শন। এখানে পৃথক পৃথক ঘরে পৃথক পৃথক বিষয়ের নিদর্শন প্রদর্শনের ব্যবস্থা রয়েছে। জাদুঘরের উদ্দেশ্য , ক...

ঠান্ডা লড়াই কী? ঠান্ডা লড়াইয়ের পটভূমি আলোচনা করো।

ঠান্ডা লড়াই কী : দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অবসানের (১৯৪৫) পর পৃথিবীর অধিকাংশ দেশ পরস্পর দুটি রাষ্ট্রজোটের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যায়। একটি আমেরিকার নেতৃত্বে পশ্চিমি ধনতান্ত্রিক রাষ্ট্রজোট অন্যটি সোভিয়েত রাশিয়ার নেতৃত্বে সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রজোট। এই দুই রাষ্ট্রজোট কোন প্রত্যক্ষ যুদ্ধ না করেও দীর্ঘকাল ধরে পারস্পরিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা ও যুদ্ধের আবহ বা ছায়াযুদ্ধ চালাতে থাকে। এই ছায়াযুদ্ধই ইতিহাসে 'ঠান্ডা লড়াই' নাম পরিচিত। মার্কিন সাংবাদিক ওয়াল্টার লিপম্যান ( Walter Lippmaan ) ১৯৪৭ সালে তাঁর The Cold War গ্রন্থে সর্বপ্রথম এই শব্দটি ব্যবহার করেন। ঠান্ডা লড়াইয়ের বৈশিষ্ঠ্য : 'ঠান্ডা লড়াই কী' এই অংশের জন্য ৩/৪ (তিন বা চার ) নম্বর (মার্কস) থাকলে অথবা বৈশিষ্ঠ্য লিখতে বললে  এখানে ক্লিক কর এবং যে অংশ বের হবে তা এই পয়েন্টের নিচে জুড়ে দাও। ঠান্ডা লড়াইয়ের পটভূমি : ঠান্ডা লড়াই-এর পিছনে শুধুমাত্র আদর্শগত বা অর্থনৈতিক কারণ বা ভিত্তি কাজ করেছিল এমন নয়। এর পিছনে আরও কিছু বিষয় তথা আন্তর্জাতিক ঘটনাবলী কার্যকর ছিল। সমগ্র কারণকে এভাবে ব্যাখ্যা করা যেতে পারে। সাম্যবাদের বিরোধিতা : রাশিয়...

পলাশির যুদ্ধের কারণ ও ফলাফল বর্ননা কর।

পলাশির যুদ্ধের কারণ ও ফলাফল পলাশির যুদ্ধ ১৭৫৬ সালে নবাব আলীবর্দি মারা যান । এরপর তাঁর পৌত্র সিরাজ-উদ-দৌলা বাংলার সিংহাসন আরোহন করেন । সিংহাসন আরোহনের কিছুদিনের মধ্যেই ইংরেজদের সাথে তাঁর বিরোধ বাঁধে , যার চূড়ান্ত পরিনতি হল ১৭৫৭ সালের পলাশির যুদ্ধ ।   এই যুদ্ধের পটভূমি বিশ্লেষণ করলেই সিরাজের সঙ্গে ইংরেজদের বিরোধের কারণগুলি পরিষ্কার হয়ে ওঠে । সেই সঙ্গে এটাও বোঝা যাবে এই বিরোধে সিরাজেরে ‘ অহমিকাবোধ ’ ও ‘ অর্থলোভ ’ দায়ী ছিল কিনা । পলাশির যুদ্ধের পটভূমি / কারণ সিরাজের সঙ্গে ইংরেজদের বিরোধের কারণগুলি হল –   আনুগত্যদানে বিলম্ব। সিরাজ বাংলার সিংহাসনে বসলে প্রথা অনুযায়ী নবাবের প্রতি আনুগত্য জানিয়ে ফরাসি, ওলন্দাজ প্রভৃতি কোম্পানিগুলি উপঢৌকন পাঠালেও ইংরেজরা ইচ্ছা করে উপঢৌকন পাঠাতে দেরি করে। এতে সিরাজ অপমানিত হন।   ষড়যন্ত্রের সংবাদ। সিংহাসনে বসার সময় থেকে ঘষেটি বেগম, সৌকত জঙ্গ ও কয়েকজন রাজকর্মচারি সিরাজের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র লিপ্ত ছিলেন। খবর আসে যে, এই ষড়যন্ত্রে ইংরেজরা যুক্ত আছে এবং তাঁকে সরিয়ে অনুগত কাউকে সিংহাসনে বসানোর চক্রান্ত করছে।   কৃষ্ণদাসকে আশ্রয়দান। ঘষেটি ব...

বাংলার সংস্কার আন্দোলনে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের ভূমিকা আলোচনা কর।

অথবা, বাংলার সমাজ ও শিক্ষা সংস্কার আন্দোলনে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের ভূমিকা আলোচনা কর। অথবা, ঊনবিংশ শতকে নারীশিক্ষা ও নারীমুক্তি আন্দোলনে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের অবদান উল্লেখ কর। অথবা, উনিশ শতকের নবজাগরণে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের ভূমিকা কি ছিল? এ প্রসঙ্গে নারীজাতির উন্নয়নে তাঁর অবদান ব্যাখ্যা কর।  বিদ্যাসাগর ও সংস্কার আন্দোলন : ঊনবিংশ শতকে ভারতে যে কজন সংস্কারকের জন্ম হয়েছিল তাঁদের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ ছিলেন ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর। তিনি ছিলেন বঙ্গীয় নবজাগরণের মূর্ত প্রতীক। তাঁর মধ্যে ইউরোপীয় নবজাগরণের প্রবল যুক্তিবাদ, ধর্মনিরপেক্ষতা, প্রগাঢ় মানবতাবাদ, এবং প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য ভাবাদর্শের এক অপূর্ব সমন্বয় ঘটেছিল। মাইকেল মধুসূদনের মতে, ' যাঁর মনীষা প্রাচীন ঋষিদের মতো, কর্মদক্ষতা ইংরেজদের মত এবং হৃদয়বত্তা বাঙালি জননীর মত। ' বিদ্যাসাগরের সংস্কার প্রচেষ্টা : বিদ্যাসাগরের সংস্কার প্রচেষ্টাকে মূলত দুই ভাগে ভাগ করে আলোচনা করা যায়। এক . শিক্ষা সংস্কার, দুই . সমাজ সংস্কার। তবে তাঁর এই দুই প্রচেষ্টার কেন্দ্রবিন্দুতে বেশিরভাগ জায়গা জুড়ে ছিল নারীশিক্ষা ও ...

চিনের ৪ ঠা মে আন্দোলনের কারণ বিশ্লেষণ কর। এই আন্দোলনের প্রভাব আলোচনা কর। (২০১৬)

অথবা, বিংশ শতকে চিনে ৪ ঠা মে-র আন্দোলনের উত্থান ও গুরুত্ব বিশ্লেষণ কর। চিনের সেই সময়কার দুটি উল্লেখযোগ্য সংবাদপত্রের নাম লেখো। অথবা, চিনের ৪ ঠা মের আন্দোলনের পটভূমি আলোচনা কর। এই আন্দোলনের ফলাফল বা তাৎপর্য ব্যাখ্যা কর।  ৪ ঠা মে-র আন্দোলন : ১৯১৪  সালে প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শুরু হলে জাপান চিনে আগ্রাসন চালায়। যুদ্ধে চীন মিত্রপক্ষে যোগ দিলেও যুদ্ধের পর তারা কোনো সুবিচার পায় নি। এরই পরিপ্রেক্ষিতে বিদেশি আধিপত্যের বিরুদ্ধে চিনা জাতীয়তাবাদী জনগণ চেন-তু-শিউ এর নেতৃত্বে  ১৯১৯ সালে ৪ ঠা মে পিকিং-এর তিয়েন-আন-মেন স্কোয়ার -এ  এক আন্দোলনের ডাক দেয়। এই আন্দোলন চিনের ইতিহাসে ৪ ঠা মে-র আন্দোলন নামে পরিচিত। আন্দোলনের কারণ ( পটভূমি ) : এই আন্দোলনের প্রেক্ষাপট আলোচনা করলে এর কারণগুলি অনুধাবন করা যায়। ইউয়ান-সি-কাই এর নৃশংসতা : ১৯১১ সালে বিপ্লবের পর রাষ্ট্রপতি সান-ইয়াত-সেন দেশের গৃহযুদ্ধ এড়াতে ইউয়ান-সি-কাই  - এর অনুকূলে স্বেচ্ছায় রাষ্ট্রপতি পদ ত্যাগ করেন। কিন্তু ক্ষমতায় আসার পর  ইউয়ান-সি-কাই  সমস্ত সাংবিধানিক পদ্ধতি বাতিল করে সামরিক একনায়কতন...

তিন আইন কী?

তিন আইন কী? ব্রাহ্মসমাজের আন্দোলনের ফলে ১৮৭২ সালে ব্রিটিশ সরকার বাল্যবিবাহ, বহুবিবাহ প্রভৃতি সামাজিক কুসংস্কারগুলি নিষিদ্ধ করে এবং বিধবাবিবাহ ও অসবর্ণ বিবাহকে স্বীকৃতি দেয়। যে আইনের মাধ্যমে ব্রিটিশ সরকার এই ঘোষণা জারি করে তাকে ' তিন আইন ' বলে।

'মুক্তদ্বার নীতি' (Open Door Policy) কী?

চিনে ইউরোপীয় দেশগুলির উপনিবেশিক আধিপত্য স্থাপনের ফলে আমেরিকা শঙ্কিত হয়ে পড়ে। তারা ভাবতে শুরু করে এর ফলে চিনে আমেরিকার বাণিজ্যিক স্বার্থ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এই পরিস্থি...

মিরাট ষড়যন্ত্র মামলা (১৯২৯) কী? এই প্রেক্ষাপট কী ছিল? এই মামলার পরিণতি কী হয়েছিল?

কোন পরিস্থিতিতে মিরাট ষড়যন্ত্র মামলা (১৯২৯) শুরু হয়? এই মামলায় অভিযুক্ত কয়েকজন শ্রমিক নেতার নাম লেখো। এই মামলার ফলাফল কী হয়েছিল? অথবা, মিরাট ষড়যন্ত্র মামলা (১৯২৯) কী? এই প্রেক্ষাপট কী ছিল? এই মামলার পরিণতি কী হয়েছিল? অথবা, ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে কমিউনিস্ট পার্টির অবদানের একটি উদাহরণ দাও। এপ্রসঙ্গে মিরাট ষড়যন্ত্র মামলার প্রেক্ষাপট আলোচনা কর। এই মামলার গুরুত্ব ব্যাখ্যা কর। উত্তর : মিরাট ষড়যন্ত্র মামলা : ভারতে শ্রমিক আন্দোলনের ক্ষেত্রে কমিউনিস্টদের প্রভাব বৃদ্ধি পেলে ব্রিটিশ সরকার ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়ে। এইরূপ পরিস্থিতিতে ব্রিটিশ সরকার কমিউনিস্টদের বিরুদ্ধে কঠোর দমননীতি গ্রহণ করেছিল। মিরাট ষড়যন্ত্র মামলা (১৯২৯) হল এরকমই এক দমননীতির প্রকৃষ্ট উদাহরণ। মামলার প্রেক্ষাপট : ১) শ্রমিক-মালিক বিরোধ । ঊনবিংশ শতকের শেষদিকে ভারতে শিল্পায়ন শুরু হলে শ্রমিক শ্রেণির উদ্ভব হয়। বিংশ শতকের প্রথম দিকে মালিক শ্রেণির শোষণ ও অত্যাচারে শ্রমিক-মালিক সংঘর্ষ অনিবার্য হয়ে ওঠে। শ্রমিক শ্রেণির অসন্তোষকে কাজে লাগিয়ে কমিউনিস্টরা ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন জোরদার করে তুলে ব্রিটিশ সরকার চিন্তায় পড়ে যা...

ভাইকম সত্যাগ্রহ কী

ভাইমক বর্ণহিন্দুদের একটি মন্দির । দক্ষিণ ভারতের ত্রিবাঙ্কুরে এটি অবস্থিত। এই মন্দিরের সামনের রাস্তা দিয়ে নিম্নবর্ণের মানুষদের চলাচল নিষিদ্ধ ছিল। শ্রীনারায়ণ গুরু ...