সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

মার্শাল প্ল্যান কী? কোন পটভূমিতে এই পরিকল্পনা ঘোষণা করা হয়? এই পরিকল্পনার মূলকথা ও গুরুত্ব ব্যাখ্যা কর?

'মার্শাল পরিকল্পনা' বলতে কী বোঝো? আমেরিকা কেন এই পরিকল্পনা গ্রহণ করে? এই পরিকল্পনার বিষয়বস্তু কী ছিলো? মার্শাল পরিকল্পনার ফলাফল বর্ননা কর।
অথবা,
'মার্শাল পরিকল্পনা' গ্রহণের কারণ ও বিশ্বরাজনীতিতে এর প্রভাব ব্যাখ্যা করো।
অথবা,
'মার্শাল পরিকল্পনা'র উদ্দেশ্য কী ছিলো ? এই পরিকল্পনার তাৎপর্য আলোচনা করো।
অথবা,
'ইউরোপীয় পুনরুজ্জীবন পরিকল্পনা' কী? এই পরিকল্পনার প্রবক্তা কে? কী উদ্দেশ্যে তিনি এই পরিকল্পনা করেছিলেন? এর ফলাফল ব্যাখ্যা করো এবং 'ঠান্ডা লড়াই' এর পিছনে এর ভূমিকা বিশ্লেষণ করো। 

মার্শাল পরিকল্পনা ( 'ইউরোপীয় পুনরুজ্জীবন পরিকল্পনা') :
১৯৪৭ সালে ১২ মার্চ মার্কিন রাষ্ট্রপতি ট্রুম্যান নীতি ঘোষণা করেন। এই  নীতিকে কার্যকরী করার জন্য মার্কিন পররাষ্ট্র সচিব জর্জ সি. মার্শাল ওই বছর ৫ জুন একটি পরিকল্পনা গ্রহণ করেন।  একই সাথে যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউরোপের পুনরুজ্জীবন ঘটিয়ে সাম্যবাদের প্রসার রোধ করার উদ্দেশ্যে তিনি 'ইউরোপীয় পুনরুজ্জীবন পরিকল্পনা' নামে এক কর্মসূচি ঘোষণা করেন। এই কর্মসূচিই 'মার্শাল পরিকল্পনা' নামে পরিচিত।
পটভূমি / কারণ / উদ্দেশ্য :
এই পরিকল্পনার কারণ বা উদ্দেশ্য নিয়ে ঐতিহাসিকদের মধ্যে মতপার্থক্য রয়েছে। তবে এই পরিকল্পনা গ্রহণের পটভূমি ব্যাখ্যা করলে এর কারণ বা উদ্দেশ্যগুলি স্পষ্ট হয়ে উঠবে।
  1. আর্থিক সংকট : দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর পশ্চিম ইউরোপের বিভিন্ন দেশের কৃষিকাজ, শিল্প উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার ফলে অর্থনৈতিক সংকট তীব্রতর হয়।
  2. কমিউনিস্টদের অগ্রগতি : অর্থনৈতিক সংকটের ফলে ইউরোপে কমিউনিস্ট ভাবাদর্শের দ্রুত প্রসার ঘটে। ফ্রান্সে অন্তত ৮০ শতাংশ শ্রমিক কমিউনিস্ট দলে যোগ দেয়। 
  3. রুশ আধিপত্যের প্রসার : পূর্ব ইউরোপের কমিউনিস্ট রাষ্ট্রগুলিতে রুশ আধিপত্য যথেষ্ট পরিমাণে বৃদ্ধি পায়। রাশিয়ার নেতৃত্বে এই দেশগুলিতে সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রজোট গড়ে ওঠে। 
  4. আমেরিকার উদ্বেগ : এইভাবে সাম্যবাদী ভাবাদর্শ ও রুশ আধিপত্যের ক্রমাগত সম্প্রসারণের ফলে আমেরিকা যথেষ্ট উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে। কারণ, এর ফলে পশ্চিম ইউরোপে রুশ প্রাধান্য প্রতিষ্ঠিত হওয়ার এবং মার্কিন নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দেবে বলে আমেরিকা ভয় পায়।
  5. সাম্যবাদ প্রতিরোধে উদ্যোগ : এই পরিস্থিতিতে মার্কিন রাষ্ট্রপতি হ্যারি ট্রুম্যান ইউরোপে সাম্যবাদ ও রাশিয়ার অগ্রগতি প্রতিরোধ করার উদ্যোগ নেন। এবং এই উদ্যোগকে বাস্তবায়িত করার উদ্যেশ্যেই মার্শাল পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। 
  6. বাণিজ্যের প্রসার : দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষ লগ্নে আমেরিকায় মুক্ত আন্তর্জাতিক অর্থব্যবস্থার প্রসার ঘটে। ইউরোপে বিপুল পরিমাণে ঋণদানের মাধ্যমে ওই অঞ্চলে মার্কিন বাণিজ্যের প্রসার ঘটানোও মার্শাল পরিকল্পনার অন্যতম উদ্দেশ্য।
  7. অনুগত রাষ্ট্রজোট গঠন : ইউরোপের বিভিন্ন দেশকে অর্থসাহায্যের মাধ্যমে সেখানে একটি অনুগত রাষ্ট্রজোট গঠন ও তাদের অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক নীতিতে প্রভাব খাটানোও মার্শাল পরিকল্পনার অন্যতম উদ্দেশ্য ছিল। 
পরিকল্পনার মূলকথা :
তবে জর্জ মার্শাল তাঁর ঘোষণায় এই পরিকল্পনার মূলকথা ব্যাখ্যা করেছেন এইভাবে ---
  1. এই পরিকল্পনা কোনো দেশ বা মতাদর্শের বিরুদ্ধে নয়। এই নীতি ক্ষুধা, দারিদ্র, হতাশা ও বেকারত্বের বিরুদ্ধে। 
  2. পশ্চিম ইউরোপের অর্থনৈতিক সংকট দূর করার উদ্দেশ্যে আমেরিকা অর্থ সাহায্য করবে। 
  3. কমিউনিস্ট শাসিত রাষ্ট্রগুলিও এই পরিকল্পনা অনুযায়ী মার্কিন অর্থ সাহায্য লাভ করতে পারবে।
  4. সাহায্য গ্রহণকারী দেশকে মূল মার্কিন পরিকল্পনা অনুযায়ী সাহায্যপ্রাপ্ত অর্থ ব্যয় করতে হবে। 
  5. সাহায্যপ্রাপ্ত দেশগুলির রাজস্ব মার্কিন পরিকল্পনা অনুযায়ী স্থির করতে হবে। 
ফলাফল / প্রভাব / প্রতিক্রিয়া :
মার্শাল পরিকল্পনা যে উদ্দেশ্যে গ্রহণ করা হয়েছিল তা অনেকাংশে সফল হয়েছিল বলে মনে করা হয়।
  1. ইউরোপের অর্থিক অগ্রগতি : মার্শাল পরিকল্পনার অর্থ সাহায্য পেয়ে পশ্চিম ইউরোপের দেশগুলির ভংগুর অর্থনীতির মন্দাভাব কেটে যায়। ইংল্যান্ডের রপ্তানি বৃদ্ধি পায় এবং ফ্রান্সের মুদ্রাস্ফীতি দূর হয়। 
  2. মার্কিন বাণিজ্যের প্রসার : সাহায্যপ্রাপ্ত দেশগুলি আমেরিকা থেকে তাদের প্রয়োজনীয় সামগ্রী আমদানি করার ফলে মার্কিন বাণিজ্যের যথেষ্ট প্রসার ঘটে। 
  3. কমিউনিস্টদের প্রতিরোধ : মার্কিন অর্থ-সহায়তায় পশ্চিম ইউরোপীয় দেশগুলি কমিউনিস্ট ভাবধারা প্রতিরোধ করতে সক্ষম হয়। 
  4. রুশ প্রতিক্রিয়া : তবে, সোভিয়েত রাশিয়া ও তার প্রভাবিত দেশগুলি এই পরিকল্পনা গ্রহণ করেনি। তারা অভিযোগ করে, (১) এর ফলে আমেরিকা সাহায্যপ্রাপ্ত দেশগুলির অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার সুযোগ পাবে, (২) ফলে দেশগুলির সার্বভৌমত্ব নষ্ট হবে, (৩) মার্কিন পুঁজিপতি সংস্থাগুলি দেশগুলিতে অর্থনৈতিক শোষণ চালাবে।
  5. 'কমিকন' প্রতিষ্ঠা : রুশ প্রভাবিত পূর্ব ইউরোপের দেশগুলিতে পুনর্গঠনের জন্য মার্শাল পরিকল্পনার বিকল্প হিসাবে কমিকন (কমিউনিস্ট ইকনোমিক ইউনিয়ন) গড়ে তোলা হয়।
  6. সর্বপরি মার্শাল পরিকল্পনার ফলে ইউরোপীয় রাজনীতি ও অর্থনীতি পরস্পরবিরোধী দুটি শিবিরে বিভক্ত হয়ে যায়। ফলে আমেরিকা ও রাশিয়ার মধ্যে ঠান্ডা লড়াইয়ের তীব্রতা যথেষ্ট বৃদ্ধি পায়।
গুরুত্ব বা তাৎপর্য :
তবে আমেরিকা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালীন শত্রুপক্ষ পশ্চিম জার্মানিকে মার্শাল পরিকল্পনার আওতায় এনে মানবিকতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করে। এই পরিকল্পনার কল্যাণকামী ফলাফল লক্ষ্য করে ব্রিটেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আর্নেস্ট বেভিন এই পরিকল্পনাকে 'একজন ডুবন্ত মানুষের জীবন প্রাপ্তি' বলে অভিহিত করেছেন।


অপেক্ষা কর। আপলোড চলছে। ...............✍✍

মন্তব্যসমূহ

OUR OTHER BOOKS (ICSE & CBSE)
OUR BOOKS fOR WBBSE & WBCHSE


বাংলা বই ★ দ্বাদশ শ্রেণি
উচ্চমাধ্যমিক বাংলা পরীক্ষার 👆আদর্শ প্রশ্নোত্তরের একমাত্র পোর্টাল

জনপ্রিয় প্রশ্ন-উত্তরগুলি দেখুন

চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত কী? এর উদ্দেশ্য কী ছিল? চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের শর্তগুলি (বৈশিষ্ঠ্য) উল্লেখ কর। ভারতের আর্থ-সামাজিক ইতিহাসে এই ভূমি-ব্যবস্থার গুরুত্ব আলোচনা কর।

অথবা , চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের পটভূমি ব্যাখ্যা কর । এপ্রসঙ্গে ভারতের কৃষক সমাজের ওপর এই বন্দোবস্ত কীরূপ প্রভাব ফেলেছিল বর্ননা কর । উত্তর চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত । চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত হল এক ধরণের ভূমি-রাজস্ব ব্যবস্থা ।   ১৭৯৩ সালে  লর্ড কর্ণওয়ালিস বাংলা , বিহার ও উড়িষ্যায় এই ভূমি-ব্যবস্থা চালু করেন । পরবর্তীকালে বারাণসী , উত্তর-পশ্চিম প্রদেশ ও মাদ্রাস প্রেসিডেন্সির কোনো কোনো অঞ্চলে  এই ব্যবস্থা  চালু করা হয় । চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের পটভূমি । কোম্পানির কর্মচারী ও ঐতিহাসিক আলেকজান্ডার ডাও ১৭৭২ সালে  প্রথম  চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের কথা বলেন । এরপর হেনরি পাত্তুলো , ড্যাক্রিস , টমাস ল প্রমুখ এই বন্দোবস্তের সপক্ষে যুক্তি দেখান । ১৭৮৬ সালে কর্ণওয়ালিশ গভর্নর জেনারেল হয়ে ভারতে আসেন ।  তিন বছর ধরে  তিনি  বাংলার ভূমি-রাজস্ব ব্যবস্থা সম্পর্কে ব্যপক অনুসন্ধান চালান ।  এরপর ১৭৯০ সালে দেশীয় জমিদারদের সঙ্গে দশ বছরের জন্য একটি বন্দোবস্ত করেন, যা ‘ দশসালা বন্দোবস্ত ’ নামে পরিচিত । সেই সঙ্গে জানিয়ে দেন , ইংল্যান্ডের কর্তপক্ষ অনুমোদন করলে এই...

জাদুঘর কাকে বলে? অতীত পুনর্গঠনে জাদুঘরের ভূমিকা আলোচনা কর।

অথবা , জাদুঘর কী ? জাদুঘরের উদ্দেশ্য ও কার্যাবলি বর্ননা কর । অথবা , জাদুঘর বলতে কী বোঝ ? আধুনিক ইতিহাস রচনায় জাদুঘরের গুরুত্ব লেখ । উঃ জাদুঘরের সংজ্ঞা বাংলা ‘ জাদুঘর ’ শব্দটির ইংরাজি প্রতিশব্দ হল মিউজিয়াম ( Museum) । ‘ মিউজিয়াম ’ শব্দটির মূল উৎস হল প্রাচীন গ্রীক শব্দ Mouseion ( মউসিয়ান) , যার অর্থ হল গ্রীক পুরাণের শিল্পকলার পৃষ্ঠপোষক মিউসদের মন্দির । এই ধরণের মন্দিরগুলিকে কেন্দ্র করে প্রাচীন গ্রিসে পাঠাগার , প্রাচীন শিল্পকলা প্রভৃতির সংগ্রহশালা গড়ে উঠত । ইন্টারন্যাশনাল কাউন্সিল অফ মিউজিয়াম -এর মতে, জাদুঘর হল একটি অলাভজনক, জনসাধারণের কাছে উন্মুক্ত এবং স্থায়ী সমাজসেবামূলক প্রতিষ্ঠান যা শিক্ষালাভ, জ্ঞানচর্চা ও আনন্দলাভের উদ্দেশ্যে মানব ঐতিহ্যের স্পর্শযোগ্য ও স্পর্শ-অযোগ্য জিনিসপত্র সংগ্রহ করে, সংরক্ষণ করে, প্রদর্শন করে এবং সেগুলি নিয়ে গবেষণা করে। উদাহরণ – ব্রিটিশ মিউজিয়াম। এখানে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের শিল্পকলা, প্রত্নতত্ত্ব, ইতিহাস, বিজ্ঞান প্রভৃতি বিভিন্ন বিষয়ের নিদর্শন। এখানে পৃথক পৃথক ঘরে পৃথক পৃথক বিষয়ের নিদর্শন প্রদর্শনের ব্যবস্থা রয়েছে। জাদুঘরের উদ্দেশ্য , ক...

ঠান্ডা লড়াই কী? ঠান্ডা লড়াইয়ের পটভূমি আলোচনা করো।

ঠান্ডা লড়াই কী : দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অবসানের (১৯৪৫) পর পৃথিবীর অধিকাংশ দেশ পরস্পর দুটি রাষ্ট্রজোটের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যায়। একটি আমেরিকার নেতৃত্বে পশ্চিমি ধনতান্ত্রিক রাষ্ট্রজোট অন্যটি সোভিয়েত রাশিয়ার নেতৃত্বে সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রজোট। এই দুই রাষ্ট্রজোট কোন প্রত্যক্ষ যুদ্ধ না করেও দীর্ঘকাল ধরে পারস্পরিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা ও যুদ্ধের আবহ বা ছায়াযুদ্ধ চালাতে থাকে। এই ছায়াযুদ্ধই ইতিহাসে 'ঠান্ডা লড়াই' নাম পরিচিত। মার্কিন সাংবাদিক ওয়াল্টার লিপম্যান ( Walter Lippmaan ) ১৯৪৭ সালে তাঁর The Cold War গ্রন্থে সর্বপ্রথম এই শব্দটি ব্যবহার করেন। ঠান্ডা লড়াইয়ের বৈশিষ্ঠ্য : 'ঠান্ডা লড়াই কী' এই অংশের জন্য ৩/৪ (তিন বা চার ) নম্বর (মার্কস) থাকলে অথবা বৈশিষ্ঠ্য লিখতে বললে  এখানে ক্লিক কর এবং যে অংশ বের হবে তা এই পয়েন্টের নিচে জুড়ে দাও। ঠান্ডা লড়াইয়ের পটভূমি : ঠান্ডা লড়াই-এর পিছনে শুধুমাত্র আদর্শগত বা অর্থনৈতিক কারণ বা ভিত্তি কাজ করেছিল এমন নয়। এর পিছনে আরও কিছু বিষয় তথা আন্তর্জাতিক ঘটনাবলী কার্যকর ছিল। সমগ্র কারণকে এভাবে ব্যাখ্যা করা যেতে পারে। সাম্যবাদের বিরোধিতা : রাশিয়...

পলাশির যুদ্ধের কারণ ও ফলাফল বর্ননা কর।

পলাশির যুদ্ধের কারণ ও ফলাফল পলাশির যুদ্ধ ১৭৫৬ সালে নবাব আলীবর্দি মারা যান । এরপর তাঁর পৌত্র সিরাজ-উদ-দৌলা বাংলার সিংহাসন আরোহন করেন । সিংহাসন আরোহনের কিছুদিনের মধ্যেই ইংরেজদের সাথে তাঁর বিরোধ বাঁধে , যার চূড়ান্ত পরিনতি হল ১৭৫৭ সালের পলাশির যুদ্ধ ।   এই যুদ্ধের পটভূমি বিশ্লেষণ করলেই সিরাজের সঙ্গে ইংরেজদের বিরোধের কারণগুলি পরিষ্কার হয়ে ওঠে । সেই সঙ্গে এটাও বোঝা যাবে এই বিরোধে সিরাজেরে ‘ অহমিকাবোধ ’ ও ‘ অর্থলোভ ’ দায়ী ছিল কিনা । পলাশির যুদ্ধের পটভূমি / কারণ সিরাজের সঙ্গে ইংরেজদের বিরোধের কারণগুলি হল –   আনুগত্যদানে বিলম্ব। সিরাজ বাংলার সিংহাসনে বসলে প্রথা অনুযায়ী নবাবের প্রতি আনুগত্য জানিয়ে ফরাসি, ওলন্দাজ প্রভৃতি কোম্পানিগুলি উপঢৌকন পাঠালেও ইংরেজরা ইচ্ছা করে উপঢৌকন পাঠাতে দেরি করে। এতে সিরাজ অপমানিত হন।   ষড়যন্ত্রের সংবাদ। সিংহাসনে বসার সময় থেকে ঘষেটি বেগম, সৌকত জঙ্গ ও কয়েকজন রাজকর্মচারি সিরাজের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র লিপ্ত ছিলেন। খবর আসে যে, এই ষড়যন্ত্রে ইংরেজরা যুক্ত আছে এবং তাঁকে সরিয়ে অনুগত কাউকে সিংহাসনে বসানোর চক্রান্ত করছে।   কৃষ্ণদাসকে আশ্রয়দান। ঘষেটি ব...

বাংলার সংস্কার আন্দোলনে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের ভূমিকা আলোচনা কর।

অথবা, বাংলার সমাজ ও শিক্ষা সংস্কার আন্দোলনে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের ভূমিকা আলোচনা কর। অথবা, ঊনবিংশ শতকে নারীশিক্ষা ও নারীমুক্তি আন্দোলনে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের অবদান উল্লেখ কর। অথবা, উনিশ শতকের নবজাগরণে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের ভূমিকা কি ছিল? এ প্রসঙ্গে নারীজাতির উন্নয়নে তাঁর অবদান ব্যাখ্যা কর।  বিদ্যাসাগর ও সংস্কার আন্দোলন : ঊনবিংশ শতকে ভারতে যে কজন সংস্কারকের জন্ম হয়েছিল তাঁদের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ ছিলেন ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর। তিনি ছিলেন বঙ্গীয় নবজাগরণের মূর্ত প্রতীক। তাঁর মধ্যে ইউরোপীয় নবজাগরণের প্রবল যুক্তিবাদ, ধর্মনিরপেক্ষতা, প্রগাঢ় মানবতাবাদ, এবং প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য ভাবাদর্শের এক অপূর্ব সমন্বয় ঘটেছিল। মাইকেল মধুসূদনের মতে, ' যাঁর মনীষা প্রাচীন ঋষিদের মতো, কর্মদক্ষতা ইংরেজদের মত এবং হৃদয়বত্তা বাঙালি জননীর মত। ' বিদ্যাসাগরের সংস্কার প্রচেষ্টা : বিদ্যাসাগরের সংস্কার প্রচেষ্টাকে মূলত দুই ভাগে ভাগ করে আলোচনা করা যায়। এক . শিক্ষা সংস্কার, দুই . সমাজ সংস্কার। তবে তাঁর এই দুই প্রচেষ্টার কেন্দ্রবিন্দুতে বেশিরভাগ জায়গা জুড়ে ছিল নারীশিক্ষা ও ...

চিনের ৪ ঠা মে আন্দোলনের কারণ বিশ্লেষণ কর। এই আন্দোলনের প্রভাব আলোচনা কর। (২০১৬)

অথবা, বিংশ শতকে চিনে ৪ ঠা মে-র আন্দোলনের উত্থান ও গুরুত্ব বিশ্লেষণ কর। চিনের সেই সময়কার দুটি উল্লেখযোগ্য সংবাদপত্রের নাম লেখো। অথবা, চিনের ৪ ঠা মের আন্দোলনের পটভূমি আলোচনা কর। এই আন্দোলনের ফলাফল বা তাৎপর্য ব্যাখ্যা কর।  ৪ ঠা মে-র আন্দোলন : ১৯১৪  সালে প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শুরু হলে জাপান চিনে আগ্রাসন চালায়। যুদ্ধে চীন মিত্রপক্ষে যোগ দিলেও যুদ্ধের পর তারা কোনো সুবিচার পায় নি। এরই পরিপ্রেক্ষিতে বিদেশি আধিপত্যের বিরুদ্ধে চিনা জাতীয়তাবাদী জনগণ চেন-তু-শিউ এর নেতৃত্বে  ১৯১৯ সালে ৪ ঠা মে পিকিং-এর তিয়েন-আন-মেন স্কোয়ার -এ  এক আন্দোলনের ডাক দেয়। এই আন্দোলন চিনের ইতিহাসে ৪ ঠা মে-র আন্দোলন নামে পরিচিত। আন্দোলনের কারণ ( পটভূমি ) : এই আন্দোলনের প্রেক্ষাপট আলোচনা করলে এর কারণগুলি অনুধাবন করা যায়। ইউয়ান-সি-কাই এর নৃশংসতা : ১৯১১ সালে বিপ্লবের পর রাষ্ট্রপতি সান-ইয়াত-সেন দেশের গৃহযুদ্ধ এড়াতে ইউয়ান-সি-কাই  - এর অনুকূলে স্বেচ্ছায় রাষ্ট্রপতি পদ ত্যাগ করেন। কিন্তু ক্ষমতায় আসার পর  ইউয়ান-সি-কাই  সমস্ত সাংবিধানিক পদ্ধতি বাতিল করে সামরিক একনায়কতন...

তিন আইন কী?

তিন আইন কী? ব্রাহ্মসমাজের আন্দোলনের ফলে ১৮৭২ সালে ব্রিটিশ সরকার বাল্যবিবাহ, বহুবিবাহ প্রভৃতি সামাজিক কুসংস্কারগুলি নিষিদ্ধ করে এবং বিধবাবিবাহ ও অসবর্ণ বিবাহকে স্বীকৃতি দেয়। যে আইনের মাধ্যমে ব্রিটিশ সরকার এই ঘোষণা জারি করে তাকে ' তিন আইন ' বলে।

'মুক্তদ্বার নীতি' (Open Door Policy) কী?

চিনে ইউরোপীয় দেশগুলির উপনিবেশিক আধিপত্য স্থাপনের ফলে আমেরিকা শঙ্কিত হয়ে পড়ে। তারা ভাবতে শুরু করে এর ফলে চিনে আমেরিকার বাণিজ্যিক স্বার্থ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এই পরিস্থি...

মিরাট ষড়যন্ত্র মামলা (১৯২৯) কী? এই প্রেক্ষাপট কী ছিল? এই মামলার পরিণতি কী হয়েছিল?

কোন পরিস্থিতিতে মিরাট ষড়যন্ত্র মামলা (১৯২৯) শুরু হয়? এই মামলায় অভিযুক্ত কয়েকজন শ্রমিক নেতার নাম লেখো। এই মামলার ফলাফল কী হয়েছিল? অথবা, মিরাট ষড়যন্ত্র মামলা (১৯২৯) কী? এই প্রেক্ষাপট কী ছিল? এই মামলার পরিণতি কী হয়েছিল? অথবা, ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে কমিউনিস্ট পার্টির অবদানের একটি উদাহরণ দাও। এপ্রসঙ্গে মিরাট ষড়যন্ত্র মামলার প্রেক্ষাপট আলোচনা কর। এই মামলার গুরুত্ব ব্যাখ্যা কর। উত্তর : মিরাট ষড়যন্ত্র মামলা : ভারতে শ্রমিক আন্দোলনের ক্ষেত্রে কমিউনিস্টদের প্রভাব বৃদ্ধি পেলে ব্রিটিশ সরকার ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়ে। এইরূপ পরিস্থিতিতে ব্রিটিশ সরকার কমিউনিস্টদের বিরুদ্ধে কঠোর দমননীতি গ্রহণ করেছিল। মিরাট ষড়যন্ত্র মামলা (১৯২৯) হল এরকমই এক দমননীতির প্রকৃষ্ট উদাহরণ। মামলার প্রেক্ষাপট : ১) শ্রমিক-মালিক বিরোধ । ঊনবিংশ শতকের শেষদিকে ভারতে শিল্পায়ন শুরু হলে শ্রমিক শ্রেণির উদ্ভব হয়। বিংশ শতকের প্রথম দিকে মালিক শ্রেণির শোষণ ও অত্যাচারে শ্রমিক-মালিক সংঘর্ষ অনিবার্য হয়ে ওঠে। শ্রমিক শ্রেণির অসন্তোষকে কাজে লাগিয়ে কমিউনিস্টরা ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন জোরদার করে তুলে ব্রিটিশ সরকার চিন্তায় পড়ে যা...

ভাইকম সত্যাগ্রহ কী

ভাইমক বর্ণহিন্দুদের একটি মন্দির । দক্ষিণ ভারতের ত্রিবাঙ্কুরে এটি অবস্থিত। এই মন্দিরের সামনের রাস্তা দিয়ে নিম্নবর্ণের মানুষদের চলাচল নিষিদ্ধ ছিল। শ্রীনারায়ণ গুরু ...